শতরূপা বোস রায়।
অর্ধেক খাওয়া চায়ের কাপটা টেবিলের ওপরে পড়ে রয়েছে। অসট্রিয়ান স্টেট অপেরার একটা পুরনো রেকর্ড বেজে চলেছে ঘরের ভিতরের বিষন্ন স্তব্ধতাকে ভেদ করে। দুটো ম্যাগপাই বাগানে রাখা পাখিদের জল খাবার পাত্রে কলহ বাঁধিয়েছে, কে আগে জল খাবে! বাইরে টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়ছে। পাহাড়ের গা বেয়ে মেঘের সারি ধীরে ধীরে সমতলে নেমে আসছে। আজ দিনটা এরকম ভেজা ভেজাই থাকবে। সেই ভোর বেলা পাহাড়ের মাথার ওপর একফালি সোনালী আভা দেখা গিয়েছিল। নিশ্ছিদ্র অন্ধকার ভেদ করে আরেকটা অলস অবসরের ঘোষণা করেছিল নিঃশব্দে, তার পরেই মেঘের ঘনঘটা। গাছের সবুজ পাতায় পাতায় ফুরিয়ে যাওয়ার রঙ ধরেছে। বাগানের রডোডেনড্রন গাছটার সবকটা পাতা লাল হয়ে এসেছে । আর হয়তো বা এক সপ্তাহ। পাতা ঝরার পালা সাঙ্গ হলে তারপর আবার সেই বসন্তের অপেক্ষা। ঠান্ডা এবছর জাঁকিয়ে পড়বে। দূরে আল্পসের চূড়ায় একটু একটু করে বরফ জমছে। ক’দিন পরেই ঢেকে যাবে বরফে। বাড়ির সামনে সরষে খেত। হলদে হয়ে রয়েছে এখনও। আর কটাদিনই মাত্র এত রঙের বাহার। এর পরেই তো প্রকৃতির অকাল বৈধব্য। প্রকৃতির সেই স্বেত-স্তব্ধতা হারমানের বাড়ির মধ্যে মেঘের হাত ধরে ঢুকে পড়ে জানালা বেয়ে। ঘরের মধ্যে কাঠ জ্বালিয়ে সারাদিন গরম কফি হাতে হারমান একা বসে থাকে, কীসের যেন প্রতীক্ষা করে সে।
হারমান রিটায়ার্ড মিলিটারি অফিসার। জার্মান আর্মি। ১৯৩৫ থেকে ১৯৪৫ অবধি যে জার্মান আর্মি সভ্যতার এক ভয়াল প্রতিচ্ছবি রচনা করে গিয়েছিল, সেই জার্মান আর্মির একজন অফিসার। ১৯২২ সালে জন্ম, ৯৮ বছরের এই বৃদ্ধ আজ জীবনের শেষ বেলায় সময়ের অলস প্রহর যাপন করে চলেছে; সম্পূর্ণ একা। স্মৃতি আর বিস্মৃতির মাঝে অনেকটা সময় কেটে গেছে হারমানের। রাত্রির অন্ধকারে এখনও আচমকা ঘুম ভেঙে যায় তারপর মোমবাতির নিভু আলোয় সারা রাত প্রহর গোনা শুধু। পাহাড়ের চূড়ায় কখন আবার সেই সোনালী রঙ ধরবে। আবার কখন ম্যাগপাইগুলো আসবে। আবার কখন সন্ধে হবে। ঘরের ফায়ার প্লেসের আগুনের লেলিহান শিখার সঙ্গে আবার কখন ভ্রাতৃ বন্ধনে জড়িয়ে পড়বে হারমান, গাইবে জীবনের জয়গান। তারপর এক অপার্থিব তন্দ্রার ঘোর ঘিরে ধরবে সময়ের অমোঘ লহমাগুলোকে। আবছায়া অন্ধকারে জীবনের ওপরে ফুটে উঠবে কোনও এক অচিন অবয়ব। আগুনের সঙ্গে একাত্ম হবে সে।
১৯৪৫ সালে মিলিটারি জীবন থেকে সিভিল লাইফে ফিরে আসে হারমান। বিয়ে করে একজন অসট্রিয়ান মহিলাকে, ভালোবেসে। একটি সন্তানও হয়। সেই থেকে বার্লিনের বাস তুলে অসট্রিয়ায় ভিয়েনা শহরের পার্শবর্তী এক গ্রামে এসে সংসার বিস্তার করে হারমান। এক সাধারণ চাকুরী জীবনে ফিরে এসেও হারমানের রক্তাক্ত অতীত তার পিছু ছাড়ে না যেন।
তার সারাটা জীবনের ওপরে একটা মৃত্যুর বোঝা। তবুও এগিয়ে চলার নৈমিত্তিক নিয়ম মেনে সংসার পাতে সে। স্বামী হিসেবে, বাবা হিসেবে নিজের মতো করে দায়িত্ব কর্তব্য পালন করে সে, কোথাও কোনও ফাঁক থাকে না। এ জীবন যেন অগ্নিস্নাত। তার ফেলে আসা জীবন থেকে স্মৃতির এক টুকরোও সে নিয়ে আসেনি এই জীবনে। নাম বদলেছে, ঠিকানা পাল্টেছে, জীবিকা বদলেছে, জীবনের ছায়া বদল হয়েছে। এতগুলো বছর শুধু একজন সাধারণ জার্মান হয়ে বেঁচে থেকেছে সে। সাধারণ, খুব সাধারণ!! তবুও মাঝে মাঝে রডোডেনড্রনের মর্মর ধ্বনিতে, বৃষ্টির অঝোর ধারায় সহস্র মানুষের হাহাকার ধ্বনিত হয়। হারমান ভয় পায়। ভয় তো তার ছায়া সঙ্গী। ভয় নাকি অন্তরের গ্লানি? জানে না সে। মুক্তি কোথায়? প্রকৃতির নিবিড়তায়? মানুষের ভালোবাসায়, সাংসারিক জীবনে নাকি সমাজ সংস্কারে? এই ৭৫ বছরে ১৯৪৫ থেকে ২০২০ সংস্কার তো অনেক হয়েছে। সভ্যতা এগিয়ে এসেছে মানুষের সৃষ্টি, অগ্রগতির হাত ধরে; কিন্তু মানুষ বদলেছে কতটুকু? হারমানও কি পেরেছে যুদ্ধের পরে প্রায়শ্চিত্ত করতে?
টেলিফোনটা বেজে উঠল হঠাৎ। অন্যদিকে থেকে ধারালো কণ্ঠে কে যেন কী একটা বলে ওঠে জার্মান ভাষায়। অসট্রিয়ার এদিকটায় জার্মান ভাষার প্রচলন বেশি। হারমান ফোনটা রেখে ঠান্ডা হয়ে যাওয়া চায়ের কাপটা নিয়ে আবার নতুন করে গরম জল ঢেলে, লং রেকর্ডারের ভলিউমটা বাড়িয়ে এসে বসে চেয়ারে। এই ফোনটার অপেক্ষা করছিল সে বেশ কিছুদিন ধরে। অবশেষে তার অবসান।
সন্ধ্যা নেমে এসেছে। অন্ধকার গাঢ় হয়েছে। বাইরে বৃষ্টি নেমেছে অঝোরে। হারমান নিজের জন্য ডিনারের ব্যবস্থা করল। সুপ আর ব্রেড। বাড়িটা পরিষ্কার করতে একজন ক্লিনিং লেডি আসে সপ্তাহে দু’বার। সে-ই বাজার দোকান করে দেয় আজকাল। হারমান আর বাড়ি থেকে বেরোয় না। আজ বিকেলে ফোনটা আসার পর কেমন যেন ছটফট করছে সে। সুপটা অর্ধেক খাওয়া পড়ে রইল, পড়ার টেবিলে গিয়ে বসল হারমান। বাড়িতে একটা ল্যাপটপ আছে, ছেলে আমেরিকা থেকে গতবার কিনে নিয়ে এসেছিল; কিন্তু সে সব ব্যবহার করতে ইচ্ছে করে না তার। বড় প্রাচীন পন্থী সে। চিঠি লেখার অভ্যাসটা এখনও যায়নি।
এ চিঠি ইংরিজিতে লিখতে হবে। পোস্ট করতে হবে সুদূর আমেরিকায়। দু’লাইনে লিখল সে – “বডি সে ফেরৎ চায় না, মৃতদেহের সৎকার যেন মার্কিন মুলুকেই করা হয়।” ফোনটা আবার বেজে উঠল। বেশ রাত হয়ে এসেছে। ঘরের মধ্যে একটা ভেজা ঠান্ডা। হারমান ফোনটা ধরতেই একটা ছোট বাচ্চার কণ্ঠস্বর ভেসে এল – “আমি তোমার কাছে যেতে চাই!” ক্লডিয়া হারমানের নাতনি। কালো কুঁচকুঁচে দুটো চোখ, কোঁকড়া কালো চুল, গায়ের রংটা মিশকালো। হারমানের ছেলে মার্ক বিয়ে করেছিল লিডিয়াকে। লিডিয়া নাইজেরিয়ান।
হারমান সাদরে গ্রহণ করেছিল লিডিয়াকে। হয়তো বা আরেকটা প্রায়শ্চিত্ত? তার ভরা সংসার তখন। ছেলে আমেরিকা থেকে ফিরলে ফ্রান্সের ফার্ম হাউসে সবাই মিলে ছুটি কাটাতে যেত। ক্লডিয়া তখন ছোট্ট ফুটফুটে একটি মেয়ে। কালো গভীর চোখ দুটো চকচক করত সব সময়।
চিঠিটা লেখা পড়ে রইল পড়ার টেবিলের ওপরে। ক্লিনিং লেডি পরের দিন সকালে এসে দেখল, ডিনার টেবিলে খাবারও অর্ধেক খাওয়া, ফাউন্টেন পেনটা কাগজের ওপরে খোলা পড়ে রয়েছে। হারমান বিছানা ছাড়েনি তখনও। চিঠিটা আর পোস্ট করে লাভ নেই। সব শেষ। ক্লডিয়ার ফোনে সবটা জেনেছে সে। ক্লিনিং লেডি সবটা শুনল। হারমানের ছেলে আর বৌ আমেরিকায় এক মিছিলে সামিল হতে গিয়েছিল। সেই যে পৃথিবী কাঁপিয়ে যারা বলে বেড়াচ্ছিল কদিন আগে, “ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার।” মানুষ হিসেবে মুষ্টিমেয় কিছু ক্ষমতাবান মানুষের কাছে নিজেদের বেঁচে থাকার অধিকার দাবি করতে গিয়েছিল সেদিন মার্ক আর লিডিয়া। সেখানে পুলিশের লাঠিতে আহত হয় লিডিয়া। লিডিয়া অন্তঃসত্ত্বা ছিল সে সময়। ট্রমাটা নিতে পারেনি। প্রচুর ব্লাড লস হয়ে মারা যায় হাসপাতালে। আর মার্ক? যাদের জন্য মিছিলে সামিল হয়েছিল মার্ক সেই তারাই সেদিন হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার সময় অন্ধকারে তাকে গুলিবিদ্ধ করে। ক্লডিয়ার মাত্র ৫ বছর বয়েস। কোথায় যাবে সে?
হারমান তাকে নিজের কাছে নিয়ে আসবে প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু অসট্রিয়ার এই অঞ্চলের এই গ্রামে ক্লডিয়ার যে ঠাঁই হবে না হারমান তা মনে মনে জানে। ঠাঁই হবে না কারণ এখনও মানুষের মনের মধ্যে সেই চামড়ার দ্বন্দ্বটা যে রয়েই গেছে। রয়ে গেছে বর্ণ বৈষম্য, জাতিভেদ। আপেক্ষিকভাবে দেখলে মনে হবে প্রকৃতির অপার ভালোবাসায় পূর্ণ, উন্নত সভ্য সমাজতান্ত্রিক এই দেশের সকল মানুষের পরিচয় একটাই; কিন্তু হারমান জানে মানুষ বুঝি সহজে বদলায় না। হারমান ভাবে, আরও কতগুলো যুদ্ধ হলে মনুষ্যত্বের জয় হবে? মানুষ তার হুঁশ ফিরে পাবে।
একজন সংবেদনশীল পড়শী কাগজপত্র রেডি করে দেয়। আমেরিকা থেকে ক্লডিয়া এসে পৌঁছবে হারমানের কাছে আর কিছুদিনের মধ্যেই। লিডিয়ার বাবা-মা থাকেন নাইজেরিয়া। সেখানেই তাকে শেষ পর্যন্ত পাঠানোর ব্যবস্থা করবে হারমান। হারমানের হাতেও যে আর বেশি সময় নেই। এও কি তবে প্রায়শ্চিত্ত? আরেকবার?
বাইরেটা বরফে ঢেকে গেছে। শ্বেতশুভ্র বরফের ওপরে গলানো সোনার মতো রোদ এসে পড়েছে। চোখটা কেমন যেন জ্বালা করে উঠছে বাইরে তাকালে। হারমানের বাড়ির সামনে সর্ষে ক্ষেতে ক্লডিয়া দৌড়ে বেড়াচ্ছে। মাঝে মাঝে এসে দাদুর গলা জড়িয়ে আদর করছে। তারপর আবার বাইরে স্নো ম্যান বানাতে দৌড়ে যাচ্ছে সে। হারমান ক্লডিয়ার জন্য একজন ন্যানি রেখেছে। সেই তার দেখাশোনা করবে এই ক’টাদিন। নাইজেরিয়ায় চিঠিও লিখেছে হারমান। আগামী মাসে তারা এসে ক্লডিয়াকে নিয়ে যাবে নাইজেরিয়া। তার জন্য অন্য মহাদেশ।
আজও অসট্রিয়ান স্টেট অপেরার একটা লং রেকর্ড বেজে চলছে ঘরের মধ্যে। বাইরেটা আজ কেমন যেন নিথর নিস্পন্দ। ঝুর ঝুর করে বরফ পড়ে চলেছে সকাল থেকে। হারমান ক্লডিয়াকে পৌঁছতে বিমানবন্দরে যায়নি। বাড়ির সামনের সর্ষে ক্ষেত থেকেই তাকে ছেড়ে দিয়েছে লিডিয়ার বাবা-মার হাতে। বরফে ঢাকা আঁকা-বাঁকা পথ বেয়ে ক্লডিয়া হারমানকে ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় খুব কেঁদেছে। সে বুঝেছে এই মানুষটার সঙ্গে জীবনে আর কখনও হয়তো বা দেখা হবে না।
কিছু বছর পরে নাইজেরিয়ার ঠিকানায় একটা চিঠি পৌঁছয়, ক্লডিয়ার নামে। চিঠির সঙ্গে হারমানের কিছু জিনিস। জার্মান আর্মির বেল্ট, হারমানের প্রথম জীবনের কিছু ছবি আর একটি ডায়েরি। সে ডায়েরি যুদ্ধের এক করুণ ইতিহাস। একাধারে যেমন পৈশাচিক, তেমনি মর্মান্তিক। ক্লডিয়া জানতে পারে হারমান আসলে একজন নাৎসি জার্মান আর্মি জেনারেল ছিল। চিঠিটা খুলে পড়ে সে।
“মাই ডার্লিং ক্লডিয়া,
এ চিঠি তোমার জন্য। তোমার প্রজন্মের সকলের জন্য যারা আমার মতো এই ৯৮ বছর অবধি বেঁচে থাকবে, পৃথিবীর বদল দেখবে বলে।
কিন্তু সত্যি কি বদল হয়? কিছু কি পাল্টায়? ৭৫ বছর আগে, যুদ্ধ শেষে, আমি সমাজ থেকে, ফেলে আসা জীবন থেকে, পালিয়ে এসেছিলাম; জীবনকে ভালোবেসে। আমি আরেকটা সুযোগ চেয়েছিলাম শুধুমাত্র যুদ্ধের পরে পৃথিবীতে শান্তি দেখব বলে। শুধু আরেকবার ঘুরে দাঁড়াব বলে, প্রায়শ্চিত্ত করব বলে। সেদিন ঘুরে দাঁড়িয়ে তাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, আমায় ক্ষমা করে দিয়েছিল কিনা তারা, কেউ সাড়া দেয়নি সেদিন। আজও সাড়া দেয়নি তারা। যুদ্ধ যে এখনও শেষ হয়নি। মানুষ যে এখনও যুদ্ধ করে চলেছে নিজের সঙ্গে। যতদিন না নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া শেষ হবে ততদিন যে এই পৃথিবীতে যুদ্ধও শেষ হবে না।
তোমার বাবা মায়ের মৃত্যুর জন্য সেই ৭৫ বছরের ইতিহাস দায়ী। সভ্য সমাজের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে থাকা সেই আদি-অনন্ত কালের গোঁড়ামি, অন্ধ জাত-পাত, বিভেদ-বিভাজন দায়ী। বিংশ শতকে দাঁড়িয়েও যদি একটা জাতিকে গর্জে বলে উঠতে হয়, “ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার।” তাহলে কোন অগ্রগতির পথে আমরা এই ৭৫ বছর ধরে হেঁটে এলাম? তোমার বাবা-মায়ের মৃত্যুর জন্য আমিও দায়ী। আমি জানি না কোন শক্তি এই অন্ধকারে আলো জ্বালাবে? ৭৫ বছর পরেও মানুষ ভুল করে চলেছে। আজও মানুষ একে-অপরের পাশে এসে দাঁড়ায়নি।
বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে যে, যুদ্ধ একদিন থামবে। একদিন এমন দিন আসবে, যেদিন মানুষ ভালোবাসবে। বিভেদ নয়, হিংসা নয়, বিভাজন নয়, বৈষম্য নয় কেবল মাত্র গভীর ভালোবাসায়। সৌভ্রাতৃত্বে। পৃথিবী এক হবে, মানুষ এক জোট হবে।
আমার অসট্রিয়ার বাড়িখানা তোমায় দিয়ে গেলাম। এ বাড়িতে বড় শান্তি। আমার বাগানের ম্যাগপাইগুলো অন্য কোথাও উড়ে গেলেও এখানেই জল খেতে আসবে রোজ, তোমার অপেক্ষায় থাকবে ওরাও।
আমি জানি, যুদ্ধ একদিন থেমে যাবে। আমার-তোমার বেঁচে থাকার মুহূর্তে না হলেও মানুষ একদিন বুঝবে, প্রমাণ করবে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি আসলে মিথ্যে।”