গল্প কুটির ওয়েব ডেস্ক|
একবার মেরাটে স্বামী বিবেকানন্দ স্যার জন লাবকের রচনা পড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে, তাঁর গুরুভাই অখণ্ডানন্দ লাইব্রেরী থেকে প্রতিদিন লেখকের গ্রন্থের একটি করে খণ্ড নিয়ে আসতেন এবং পরের দিন সেটি ফেরৎ দিয়ে আবার নতুন খণ্ড নিতেন। একদিন সেই লাইব্রেরিয়ান অখণ্ডানন্দকে বলেন আপনার গুরুভাই বই পড়ার অভিনয় করেন মাত্র, একদিনে এক-একটি খণ্ড পড়ে ফেলা কখনই সম্ভব নয়। এই অভিযোগ পেয়ে বিবেকানন্দ যান সেই লাইব্রেরিয়ানের কাছে, তাকে অনুরোধ করেন পরীক্ষা নেওয়ার। সবাইকে অবাক করে সেই পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ন হন তিনি।
স্বামীজির এই ঘটনা উল্লেখ করার কারণ একটাই। পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ থাকেন, যাদের ক্ষমতা আমাদের কাছে কল্পনাতীত। তেমনই একজন হলেন আমেরিকার বিস্ময়মানব ‘লরেন্স কিম পিক’। ১৯৫১ সালে আমেরিকার ‘সল্টলেক সিটিতে একজন স্পেশ্যাল চাইল্ড হিসাবে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার মাথা ছিল অস্বাভাবিক রকমের বড়। বিকাশ ক্ষমতাও ছিল অন্য শিশুদের তুলনায় কম। তবে ছোট থেকেই ছিল অবিশ্বাস্য রকমের স্মৃতিশক্তি। মাত্র ১৬-২০ মাস বয়স থেকেই মুখস্থ করতে পারতেন তিনি। একই সাথে বইয়ের দুটি পাতা পড়ার ক্ষমতা ছিল তার। ১২,০০০ বই ছিল তার মুখস্থ। একটি বই পড়তেন না একবারের বেশি, বলা ভাল পড়ার প্রয়োজন হত না তার। তাই অনেকে তার মেমোরিকে ‘ফটোগ্রাফিক মেমোরি’ বলে থাকেন।
অটিজিম আক্রান্ত হওয়ায় তার স্বাভাবিক জীবন ছিল প্রতিবন্ধকতায় ভরা। চার বছর বয়স পর্যন্ত উঠে দাঁড়াতে পারেননি তিনি। দাঁত মাজতে বা জামার বোতাম নিজে লাগাতে পারতেন না, তবে আইকিউ টেস্টে কখন ৮৭ শতাংশের নীচে পাননি। কর্মজীবনে জটিল হিসাব করে ফেলতেন ক্যাল্কুলেটর ছাড়াই। তাই দুজন হিসাবরক্ষক ও একটি কম্পিউটারের জায়গায় তাকে স্থলাভিষিক্ত করে তার কোম্পানি।
এই কিম পিকের জীবনের উপর নির্ভর করেই ১৯৮৮ সালে মুক্তি পায় আমেরিকান চলচ্চিত্র ‘রেইন ম্যান’। ১৯৮৯-তে ৪টি অস্কার সহ ২৭টি পুরস্কার পেয়েছিল এই চলচ্চিত্র। কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন টম ক্রুজ ও ডাস্টিন হফম্যান।
চিত্র ঋণঃ আনবিলিভেবেল ফ্যাক্টস