গল্প কুটির ওয়েব ডেস্ক|
ঊর্বশী যাদব, এক সম্ভ্রান্ত পাঞ্জাবি পরিবারের মেয়ে। জীবন কাটছিল আর পাঁচটি সাধারণ মেয়ের মতোই। স্নাতক শেষ করে সামান্য একটি অফিস-নির্বাহীর চাকরি করতেন। ২০১০ সালে বিয়ে হয় রিয়াল এস্টেট সংস্থায় কর্মরত অমিত যাদবের সঙ্গে। প্রথম কিছুদিন সব ঠিকঠাকই চলছিল, কিন্তু বিয়ের একবছর কাটতে না কাটতেই ক্রিকেট খেলতে গিয়ে গুরুতর আহত হন অমিত। অফিস যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়, ঊর্বশী সিদ্ধান্ত নেন আবারও কাজে যুক্ত হবেন তিনি। সেই মতো একটি স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন।
স্বাভাবিক হয়ে যায় সবকিছু। কিন্তু ঈশ্বর যার জন্য আরও বড় কিছু ভেবে রেখেছেন, তাকে এই সামান্যতেই খুশি হতে দেবেন কেন। ২০১৬তে আবার দুর্ঘটনার শিকার হন অমিত, এবার ছাদ থেকে পরে গিয়ে। স্কুলের চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন ঊর্বশী। কিন্তু সংসার তো চালাতে হবে। স্বামী- স্ত্রী মিলে ঠিক করেন ব্যবসা করবেন। রেস্তোরা বা বিউটি পার্লার খোলার কথা ভাবেন প্রথমে। কিন্তু ব্যবসার পুঁজি পাবেন কোথায়?

একদিন ঊর্বশী রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। হঠাৎই তার চোখে পড়ে রাস্তার ধারে ঠেলাগাড়িতে এক ব্যক্তি ছোলা-কুলচা বিক্রি করছেন। তার সঙ্গে কথা বলে এই ব্যবসা সম্পর্কে সব কিছু জেনে নেন। সব দ্বিধাদ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলে একটা ঠেলাগাড়ি কিনে ছোলা বিক্রি করতে শুরু করেন। ঠেলাগাড়ির নাম দিলেন ‘ঊর্বশী’জ ছোলা-কুলচা’।
প্রথম প্রথম অবশ্য আত্মীয়স্বজনরা নিরুৎসাহিত করেন উর্বশীকে। উর্বশীর নিজেরও সন্দেহ ছিল শেষ পর্যন্ত সফল হবেন কিনা। কিন্তু মাস দেড়েকের মধ্যেই প্রচুর গ্রাহক আসতে শুরু করে। এর পর ঊর্বশীর এই ঠেলাগাড়ির খাবার স’ম্পর্কে কোনও গ্রাহক ফেসবুকে শেয়ার করেন। তারপর থেকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। দিনে আড়াই-তিন হাজার টাকা উপার্জন করতে শুরু করেন। সকাল সাড়ে ৮টায় দোকান শুরু করতেন। বন্ধ করতেন বিকাল সাড়ে ৪টায়। এভাবেই আজ নিজস্ব রেস্তোরাঁর মালিক ঊর্বশী। গুরগাওতে তার তিন কোটি টাকার বাড়ির সামনে অপেক্ষা করে কোটি টাকার এসউভি।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
ছবি: টুইটার, কার্লি টেলস