গল্প কুটির ওয়েব ডেস্ক।
বালির কার্পেটে বসে নোনা হাওয়ার স্পর্শ, পায়ে এসে ছুঁয়ে যায় সাদা ফেনা। সামনে সমুদ্রের সীমারেখার ওপারে ক্রমশ নিমজ্জিত হওয়া সূর্য, গাঢ় অন্ধকারে রাতের আকাশে চাঁদ-তারার জমজমাটি আড্ডা। কাঠ সাজিয়ে আগুন জ্বেলে দিব্যি আড্ডায় মজে যেতে পারেন আপনারাও। রাতের অন্ধকারে নির্ভানা বীচের সৌন্দর্য্যে যুক্ত হয় আরও এক উপকরণ, তা হল ব্লুফাইটোপ্ল্যাংটন। বীচে সমুদ্রের জলে পা ফেলে এগিয়ে গেলে সূক্ষ নীল আলোর জ্যোতির মতো যেন জ্বলে ওঠে জলের ভিতর থেকে। ভারতের একটা বিখ্যাত সি বীচের মধ্যে গোয়া অন্যতম, আর বেড়াতে ভালবাসেন যাঁরা তাঁদের লিস্ট থেকে কিন্তু বাদ যায় না এই নামটি। স্বভাবতই ভিড়ও হয় প্রচুর। তবে অনেকেই আছেন যাঁরা জনবহুল সমুদ্রতট নয়, তার শান্ত-স্নিগ্ধ রূপের সাক্ষী থাকতে চান। সেই রূপের অন্বেষণেই অনেকে বেছে নিচ্ছেন গোকর্ণ-কে।
গোয়া থেকে মাত্র পাঁচ ঘন্টার দূরত্বে অবস্থিত গোকর্ণ। কর্ণাটকের পশ্চিম উপকূলের ছোট্ট এই শহর। একাধিক বীচ থাকলেও চারটি প্রধান বীচ হল- ওমবীচ, কুদলেবীচ, হাফমুন বীচ ও প্যারাডাইস বীচ। সমুদ্র সৈকত এখানকার প্রধান আকর্ষণ বটে তবে সবুজের সমারোহে এতটুকু কার্পণ্য করেনি প্রকৃতি। সারি সারি গাছের পাশে সমুদ্র সৈকত তাদের অপরূপ সৌন্দর্য্য নিয়ে বিরাজমান।
প্রধান আকর্ষণ গুলি –
মহাবালেশ্বর মন্দির যা গোকর্ণ বাস স্টপ থেকে ৫০০ মিটার দূরত্বে অবস্থিত, এখানকার দ্রাবিড়ীয় স্থাপত্য নজরকাড়বে বৈকি!
ব্যানানা বোট রাইড, ওম বীচে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যে ৬টা পর্যন্ত চলে এটি, ১৫ মিনিটের সওয়ারীতে মাথা পিছু ভাড়া২০০-৩০০টাকা
বীচক্যাম্পিং,বীচট্রেকিং, সানরাইজ- সানসেট, কুদলেবীচে,বীচ মানেই সি ফুড মাস্ট সঙ্গে অল্পবিস্তর কেনাকাটা।
মির্জান ফোর্ট, যা গোকর্ণ বাসস্টপ থেকে যথাক্রমে ৪৬ কিমি ও ২১ কিমি দূরে অবস্থিত। যেহেতু জায়গা দুটি শহর থেকে একটু দূরে ও যাত্রা বাবদ খরচ পড়বে হাজার খানেক তাই ট্যুর বাজেট সামান্য বাড়ানো সম্ভব হলে এই দুটি জায়গাও ঘুরে ফেলতে পারেন।
কীভাবেযাবেন?
পৌঁছানো সম্ভব আকাশ-রেল-সড়ক তিন পথেই। গোকর্ণ পৌঁছতে গেলে ভারতের যে কোনও বড় শহর থেকে সোজা চলে যাওয়া যায় গোয়াতে।
গোয়ার ড্যাবোলিম এয়ারপোর্ট যা গোকর্ণ থেকে ১৪০ কিমি দূরে অবস্থিত। রেলপথের ক্ষেত্রে অপশন দুটি। হাওড়া থেকে মাডগাওঁ হয়ে গোকর্ণ রোডে নেমে ট্যাক্সি ধরে পৌঁছে যাওয়া যায় গোকর্ণে, নয়তো বা আনকোলা স্টেশনে নেমে ২০ কিমি পথ ট্যাক্সি করে গিয়ে শহরে প্রবেশ। সড়কপথে বাসে যেতে গেলে ব্রেক করতে হবে তিন-চারবারেরও বেশি, তাই প্রাইভেট ট্রান্সপোর্ট ছাড়া সড়ক পথ উপেক্ষা করাই ভাল। তবে বাজেট ফ্রেন্ডলি ট্যুরের ক্ষেত্রে রেলপথই হবে সবচেয়ে সাশ্রয়ী। মোটামুটি ১২০০-১৩০০ টাকার মধ্যে ট্রেন-ট্যাক্সি মিলিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়া যাবে।
থাকার ব্যবস্থা –
ব্যাগ প্যাকার থেকে শুরু করে লাক্সারি ট্র্যাভেলার অপশন রয়েছে সবার জন্যই। সবচেয়ে কম ৫০০-১০০০টাকা ও তার থেকেও বেশি দামে পাওয়া যাবে হোটেল-হোমস্টে।
উপযুক্ত সময় –
অক্টোবর থেকে মার্চ এই সময়টা গোকর্ণ ভ্রমণের জন্য শ্রেষ্ঠ। এপ্রিল-মে অফ সিজন, গরমের জন্য ভীড় আরও কম থাকে। অতিরিক্ত হিউমিডিটি অস্বস্তির কারণ হওয়ায় এই সময়ে না যাওয়াই শ্রেয়। বর্ষার সময়টা একেবারেই যাওয়া উচিত নয়।
আট থেকে দশ হাজারের মধ্যে ছুটি এনজয় করতে হলে গোকর্ণ কিন্তু দারুন একটা অপশন হতে পারে।