গল্প কুটির ওয়েব ডেস্ক|
কথায় আছে ‘ভেতো বাঙালি’। তবে ভাত যে শুধু বাঙালিদের প্রিয় তা নয়। সারা ভারতেই চালের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়। চাল থেকে আমরা বানিয়ে থাকি নানা মুখরোচক পদ, যা স্বাদে ও পুষ্টিগুণে ভরপুর। তবে জানেন কি, চালের উৎস শুধুমাত্র ধান নয়। ধান ছাড়াও চালের অন্যান্য উৎস রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল বাঁশ। বাঁশ গাছ থেকে উৎপন্ন চালকে বলা হয় ব্যাম্বু রাইস।
ব্যাম্বু রাইসের স্বাদ কিছুটা আটার মতো। তবে বাজারের বাঁশকাঠি চালের সঙ্গে ব্যাম্বু রাইসকে গোলাবেন না, দুটি কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা। উচ্চ ক্যালরি যুক্ত ব্যাম্বু রাইস মূলত কর্ণাটকের কিছু জায়গাতে পাওয়া যায়। যেখানে ব্যাম্বু রাইস ‘মুলায়িরি’ নামে পরিচিত। এছাড়াও কেরালার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ এই চাল উৎপাদন করত। উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষেরা অর্থ উপার্যনের জন্য ব্যম্বু রাইস চাষ করেন। আশ্চর্যের বিষয় হল এই চাল ১০০ বছরে মাত্র দুই থেকে তিনবার জন্মায়। ওড়িশায় ব্যম্বু রাইস শেষ দেখা গিয়েছিল ১৯৭৯ সালে। আজ থেকে প্রায় ৪১ বছর আগে।
কী এই ব্যাম্বু রাইস?
বাঁশের শুকনো কান্ডের মধ্যে এই চাল জন্মায়। বাঁশ ফুলের বীজকেই ব্যাম্বু রাইস বলা হয়। এই ফুল দেখতে হাল্কা সবুজ রঙের, কিছুটা লতানো প্রকৃতির হয়। দক্ষিণ ভারতের একটি প্রাচীন উৎসব ‘পোঙ্গল্’। সেই উৎসবে পূর্বের রীতি মেনে এখনও ব্যাম্বু রাইস দিয়ে ক্ষীর তৈরি করা হয়। শুধু দক্ষিণ ভারতই নয়, উত্তর ভারতের বেশ কিছু এলাকাতেও ব্যাম্বু রাইসের প্রচলন লক্ষ্য করা যায়।
সাধারণ চালের ভাত এবং ব্যাম্বু রাইস থেকে তৈরি ভাতের বেশ কিছু তফাৎ রয়েছে। এই চালের মধ্যে রয়েছে এক ব্যতিক্রমী সুগন্ধ। রান্নার ক্ষেত্রে এই চাল সেদ্ধ হতে অনেকটাই বেশি সময় নেয়। আবার স্বাদের দিক থেকে ব্যাম্বু রাইস হাল্কা মিষ্টি, কিছুটা আটার মতো খেতে। রান্নার পর এটি একটু আঠালো হয়ে যায় বলে পাত্রের গায়ে লেগে থাকে। বাজারে এই চাল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। তবে সব জায়গায় এই চাল পাওয়া যায় না। স্বাদে একটু অন্যরকম হলেও উপকারিতার দিক থেকে ব্যাম্বু রাইসের জুরি নেই।
ব্যাম্বু রাইসের উপকারিতা –
- এই চালে ফ্যাটের ভাগ একেবারেই কম, তাই স্বাস্থের জন্য এই চাল খুবই উপকারি।
- কোলেস্টোরল কম থাকায় ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে এই চালের ভাত খাওয়া নিরাপদ।
- বিভিন্ন ধরণের ব্যাথা যেমন জয়েন্ট পেন, গলা ব্যাথা, ব্যাক পেন কমানোর ক্ষেত্রে ঔষধের মতো কাজ করে ব্যাম্বু রাইস।
- আয়ুর্বেদেও এই চালের ব্যবহার রয়েছে।
বাড়িতে বসে ব্যম্বু রাইসের স্বাদ নিতে হলে অনলাইনে এই চাল অর্ডার দিতে পারেন। বিভিন্ন অনলাইন শপিং অ্যাপে এই চাল কিনতে পাওয়া যাচ্ছে।
কমেন্টস
এ কেমন চাল যে ৪৬ বছর ধরে দেখা যায়নি অথচ সরবরাহ করছেন আপনারা?? এই চাল কি নষ্টহয় না??