গল্পকুটির ওয়েব ডেস্ক|

আমাদের ভারতবর্ষ হিন্দু প্রধান দেশ। তাই সারা দেশজুড়ে রয়েছে বিভিন্ন দেব-দেবীর মন্দির। দেশের অভ্যন্তরীণ প্রতিটি জায়গার ভৌগলিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায় সেখানকার আচার-ব্যবহার। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রতিটি মন্দিরের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম। এই সকল আচার-ব্যবহারের মধ্যে প্রকটভাবে রয়ে যায় লিঙ্গ ভিত্তিক বৈষম্য। তবে কেরলে এমন একটি মন্দির আছে যেখানে নির্দিষ্ট কিছু সময়ের জন্য ভুলে যাওয়া হয় লিঙ্গ ভিত্তিক ভেদাভেদ। নারী ও পুরুষ এক হয়ে যান ভক্তির বশে।  

কেরলের কোল্লামে অবস্থিত সেই মন্দিরটি, নাম কোট্টানকুলাঙ্গারা। এই কোট্টানকুলাঙ্গারা দেবীর মন্দিরে আরাধনা করা হয় আদি শক্তির ভগবতী রূপকেই। তবে এখানে রয়েছে একটি ভিন্ন নিয়ম, যা স্বভাবতই আশ্চর্যজনক। এই মন্দিরে পুরুষরা পুজো দিতে আসলে মহিলাদের মতো শাড়ি এবং গয়না পরে আসেন। শুধু তাই নয়, অনেকেই আবার মাথায় খোঁপা বেঁধে সেজেগুজেও পুজো করেন।

স্থানীয়দের মুখে কথিত, বহু বছর আগে ওই মন্দিরে জায়গায় ছিল ঘন জঙ্গল। রাখালরা সেখানে তাদের গরু মহিষদের চরাতে নিয়ে এসে নিজেরা খেলা করত। তাদের খেলার সবথেকে প্রিয় বস্তু ছিল একটি বড় মাপের পাথর। এমনও শোনা যায় রাখালরা খেলার সময় তাদের নিজেদের পোষাক বদলে মেয়েদের পোশাক পরে খেলা করত। একদিন খেলার মাঝে সেই পাথর দেবী দুর্গার মূর্তি ধারণ করে। আর সেই খবর ছড়িয়ে পড়ে সারা গ্রাম জুড়ে। তারপর সেখানে মন্দির স্থাপিত হয় এবং সেই মন্দিরের দেবীকে সন্তুষ্ট করতে নারীদের বেশ ধারণ করে পুরুষরা পুজো দিতে আসতেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা একমাত্র নারী বেশী পুরুষরাই দেবীকে সন্তুষ্ট করতে পারবেন। তাই অতীত থেকে আজও সেখানে চলে আসছে ওই একই নিয়ম। আগে শুধুমাত্র ওই এলাকার বাসিন্দারাই মন্দিরের এই রীতি মেনে পুজোয় অংশগ্রহণ করত, তবে বর্তমানে দেশ-বিদেশ থেকে আসা বহু মানুষই এই পুজোয় অংশ নিয়ে থাকে।

ছবিঃ উইকিপিডিয়া এবং আমারউজালা