গল্প কুটির ওয়েব ডেস্ক।

কথাটা শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। বাঙালির মহানায়িকা ‘ইন্ডাস্ট্রির ম্যাডাম’ নিজেই ছিলেন নিজের মেকআপ আর্টিস্ট।  অন্য কারো মেকআপ তার পছন্দ হত না। একমাত্র বসির মিয়া ছাড়া। তার সৌন্দর্য,  ব্যক্তিত্ব সবেতেই তিনি ছিলেন অনন্যা।  তার ধারে কাছেও যেতে পারেনি কেউ।  আজ এতদিন পরেও তাই তিনি রহস্যাবৃত,  আমাদের মহানায়িকা।  

পাবনার মেয়ে রমা যখন স্টুডিওতে প্রবেশ করতেন তখন তিনি সুচিত্রা সেন।  কিভাবে সাজাতেন তিনি নিজেকে! তা নিয়ে সবারই কমবেশি কৌতূহল আছে।  আগেই বলেছি মেকআপ এর ব্যাপারে তিনি ছিলেন বেশ খুঁতখুঁতে। বিশ্বাস করতেন একমাত্র শেখ বশির আহমেদকে। ম্যাডামের পছন্দের বশির মিঞা। সেই সাদাকালো যুগে মেকআপ কারেকশনের সুযোগ ছিল কম। এখনকার মতো এতো বিদেশি প্রোডাক্ট এর আধিক্য ছিল না তখন। কিন্তু বশির আহমেদ ম্যাডামের জন্য বাড়িতে বানানো জিনিস দিয়েই মিসেস সেনের উপযোগী মেকআপ বানাতেন। তার হাতের জাদু আর তুলির টানে ম্যাডাম হয়ে উঠতেন আরো মোহময়ী। 

অনেক সময় নিজেও নিজের মেকআপ করে নিতেন। যতক্ষণ না পর্যন্ত তার মেকআপ তার পছন্দসই হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত কিছুতেই ফ্লোরে আসতেন না মহানায়িকা। আর পুরো মেকআপ শেষে নিজেই আঁকতেন নিজের মুখের সেই বিখ্যাত তিল। যার জন্য একসময় উন্মাদ ছিল বাঙালি যুবসমাজ। কোন মেকাপ ম্যান কে দিয়েই আঁকা তেরা মুখের সেই তিলটি। 

তবে মেকআপ আর্টিস্ট কারোর সঙ্গে তিনি কখনো খারাপ ব্যবহার করেননি। সম্পর্ক ছিল বন্ধুত্বের,  মহানায়িকার পছন্দের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতেন বসির। তাই ম্যাডাম তাকে বিশ্বাস করতেন।  

নিজের লুক নিয়ে সব সময় সচেতন থাকতেন তিনি। সাদা কালো পর্দায় চোখ ঠোঁট ফুটিয়ে তোলা ও বেশ চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার ছিল। সেই চ্যালেঞ্জ দক্ষ হাতে সামলাতে বসির ম্যাডামের নির্দেশে। মর্ডান সাজে সজ্জিত হতে ভালোবাসতেন তিনি। তার চোখ আর চুলের স্টাইল,  জুয়েলারি কালেকশন সব কিছুতেই তিনি সময়ের থেকে অনেকটাই এগিয়ে। 

অন্তরালে থাকা সেই রহস্যময়ী আজ চলে গেছেন মহাসিন্ধুর ওপারে  কিন্তু তার সেই হৃদয়বিদারক চাহনি আর মধুর হাসি আমাদের কাছে চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

 তথ্যসূত্র -এনডিটিভি নিউজ

ছবি- আউট লুক ইন্ডিয়া