গল্প কুটির ওয়েব ডেস্ক|

আগে সব বাড়িতেই দেখা মিলত থানকুনি (Centella Asiatica) পাতার, বাড়ির আনাচেকানাচে কিংবা বাগানে। পেটের যে কোনও সমস্যা হলেই খোঁজ পড়ত এই পাতার। প্রাচীন আর্য়ুবেদ শাস্ত্রেও থানকুনির গুণাগুণের কথা বলা হয়েছে। এর রস থেকে প্রস্তুত হয় বিভিন্ন ওষুধও। তবে বর্তমানে এই পাতা সহজে দেখা যায় না। অনেকেই এই ঔষধি পাতা সম্পর্কে অবগতও নন। কী কী গুণ রয়েছে থানকুনি পাতার তা জানলে আপনিও যে খোঁজ করবেন থানকুনির, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে এই পাতার জুড়ি নেই। জানলে আবাক হবেন, এই ভেষজ পাতা খ্রিস্টপূর্ব ১৭ শতক থেকে আফ্রিকা, জাভা এবং সুমাত্রাতেও ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও দারুণ খুবই উপকারী। বিস্তরে জেনে নেওয়া যাক থানকুনি পাতার উপকারিতা।

মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ নিয়মিত থানকুনি পাতা খেতে পারলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পেন্টাসাক্লিক ট্রিটারপেনস উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যার ফল স্বরূপ ব্রেনসেল ভালোভাবে কাজ করতে সক্ষম হয়। স্মৃতিশক্তি বাড়ে এবং বুদ্ধির বিকাশ হয়। অ্যালঝাইমার্সের ওষুধও তৈরি হয় এই পাতার রস থেকে।

দ্রুত রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করেঃ থানকুনি পাতায় রয়েছে বিভিন্ন রকম খনিজ উপাদান, যা দ্রুত রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।

শরীরের ভেতরের জ্বালাভাব কমায়ঃ কোনও কারণবশত শরীরের অভ্যন্তরীণ কোনও ক্ষত সৃষ্টি হলে হলে নানারকম সমস্যা দেখা দেয়। এর ফলে শরীরের অন্যান্য অঙ্গেরও ক্ষতি হতে পারে। এক্ষেত্রে থানকুনি পাতা ভীষণভাবে উপকারী। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটারি উপাদান। যার ফলে খুব তাড়াতাড়ি জ্বালা, যন্ত্রণা কমে যায়, ক্লান্তিভাব দূর হয়। ইনফেকশনকেও দূরে রাখে।

শরীরে রক্ত প্রবাহ ঠিক রাখেঃ অনেকেই থ্রম্বোসিসের ভুক্তভোগী। এছাড়াও বিভিন্ন কারণে শরীরে রক্তপ্রবাহের সমস্যা হয়। থানকুনি পাতার রস খেলে রক্ত পরিষ্কার বা শুদ্ধ থাকে। ফলে শরীরের প্রতিটি কোশে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে যায়। এতে বহু সমস্যার উপশম মেলে।

মানসিক অবসাদ দূর করেঃ মানসিক সমস্যায় ভুগলে খুব ভালো ফল দেয় থানকুনি পাতার রস। এই ঔষধি পাতা স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণে রাখে, ফলে মানসিক চাপ এবং অস্থিরতা কমে। এতে অ্যাংজাইটির আশঙ্কাও কম হয়।

ক্ষত নিরাময়ঃ যে কোনও ক্ষতের দ্রুত রক্তপাত বন্ধ করতে পারে থানকুনি পাতার রস। এতে ব্যথার উপশম হয় এবং সংক্রমণের আশঙ্কাও থাকে না।

ঘুম ভালো হয়ঃ ঘুমের সমস্যা হলে প্রতিদিন সকালে উঠে থানকুনি পাতা ভেজানো জল খেলে উপকার পাওয়া যায়, এতে স্নায়ু শিথিল হবে এবং সহজেই ঘুম আসে।

ডিটক্সিফিকেশনঃ গাজর এবং পাতিলেবুর রসের পাশাপাশি থানকুনি পাতাও খুব ভালো ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে। নিয়মিত থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে এক চা-চামচ মধু, মিশিয়ে খান। এতে শরীরের যাবতীয় টক্সিন বেরিয়ে যাবে।

পেটের সমস্যায়ঃ পেটের যে কোনও সমস্যায় থানকুনি পাতা দারুণ উপকারী। আমাশয়, পেট গরম এবং আলসারের মতো সমস্যা সেরে যায় এই পাতার গুণে। নিয়মিত থানকুনি খেতে পারলে হজম ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।

ছবিঃ পিক্সাবে