গল্প কুটির ওয়েব ডেস্ক|

স্বপ্ন দেখা যতটা সহজ, বাস্তব ঠিক ততটাই কঠিন। কিন্তু ইচ্ছা থাকলে সব বাঁধাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। এমনটাই করে দেখাল তামিলনাড়ুর একটি একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। শত বাঁধা পেরিয়ে নিজের স্বপ্নকে সত্যি করতে চলেছে সে। মহাকাশ নিয়ে গবেষণা করা স্বপ্ন ছিল তার। নিজের চেষ্টাতেই এবার নাসায় পাড়ি দিতে চলেছে সেই মেয়ে।

তামিলনাড়ুর পাত্তুকোট্টাইয়ের বাসিন্দা জে জয়ালক্ষ্মী। বহুদিন আগেই তার বাবা সংসার ছেড়ে চলে গিয়েছেন। অপরদিকে মানসিক রোগী মা এবং ছোট ভাইয়ের দেখাশোনার দায়িত্ব ছিল তার উপর। সব মিলিয়ে চাপে পড়ে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে জয়ালক্ষ্মীকে। বাদাম বিক্রি করে এবং টিউশন পড়িয়ে যা উপার্যন হত সেই দিয়েই কোনও রকমের সংসার চালাতো এই কিশোরী। এই সবকিছুর মাঝেও নিজের পড়াশোনাকে থেমে যেতে দেয়নি সে। তামিলনাড়ুর একটি সরকারি স্কুলের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী জয়ালক্ষ্মী।

ছোট থেকেই বিজ্ঞান নিয়ে দারুণ আগ্রহ ছিল তার। নিজের মেধাকে কাজে লাগিয়ে আগামী বছরের মে মাসে নাসায় গিয়ে মহাকাশচারীদের সঙ্গে দেখা করতে চলেছে সে। এবার প্রশ্ন হল, এত দরিদ্র হওয়ার পরেও কীভাবে আসলো এই সুযোগ?

জানা গিয়েছে, একদিন খবরের কাগজ পড়তে গিয়ে একটি বিজ্ঞাপনে চোখ পড়ে তার। ওই বিজ্ঞাপনে একটি সংস্থা পড়ুয়াদের জন্য একটা বিশেষ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। যাখানে পুরস্কার হিসাবে ছিল নাসায় যাওয়ার সুযোগ। নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে, খবরটা দেখা মাত্রই ফর্ম ফিলাপ করে ফেলে জয়ালক্ষ্মী। কাজের ফাঁকে নিজের মতো করে বাড়িতেই প্রস্তুতি নিতে থাকে সে। আর সেই কঠিন প্রতিযোগিতায় সফলও হয়।

তবে জয়ালক্ষ্মীর স্বপ্ন পূরণের পথে সমস্যা হয়ে হয়ে দাঁড়ায় তার দারিদ্রতা। আমেরিকা যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা কোথায় পাবে সে! এক্ষেত্রে তাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তার বিদ্যালয়ের কিছু সহপাঠী এবং শিক্ষকরা। তাদের সহযোগিতায় নিজের পাসপোর্ট বানাতে সক্ষম হয় সে। এর জন্য পাসপোর্ট অফিসারও তাকে সাহায্য করে।    

এছাড়াও জেলা শাসক এবং অন্যরা ৬০,০০০ টাকা এবং ওএনসিজির তরফ থেকে ৬৫,০০০ টাকার সাহায্য দেওয়া হয়েছে তাকে। কিন্তু নাসা যেতে তার আরও ৭০,০০০ টাকার প্রয়োজন। সেই টাকার বন্দোবস্ত হয়ে গেলেই আগামী বছরের মে মাসে নাসার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিতে পারবে জয়ালক্ষ্মী।