গল্প কুটির ওয়েব ডেস্ক|
সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-এর তরফে কোভিড-১৯ সম্পর্কে একটি নতুন নির্দেশিকা জারি কারা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে করোনা ভাইরাস বায়ুবাহিত হয়ে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাই সংক্রমণ এড়াতে বদ্ধ পরিবেশ এবং ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছে ‘হু’। তবে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস কীভাবে বাতাসে ভাসতে পারে তা জানেন কি?
‘হু’-এর নির্দেশিকার এরোসলের কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে বলে রাখি এরোসল এবং ড্রপলেট কিন্ত একেবারেই ভিন্ন। আর একজন কোভিড-১৯ আক্রান্তের ড্রপলেট থেকে এক বা একাধিক মানুষের শরীরে সংক্রমণ হতে পারে। তবে বাতাসে ভাসার ক্ষমতা ড্রপলেটের মধ্যে থাকে না। এবার প্রশ্ন হল এরোসল কী? তার থেকে করোনার বায়ুবাহিত হবে কীভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে প্রথমেই বিস্তরে জানতে হবে ড্রপলেট এবং এরোসলের সম্বন্ধে। প্রথমেই আসা যাক ড্রপলেটের বিষয়ে-
ড্রপলেট কী?
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মূলে রয়েছে হাঁচি এবং কাশি। আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির হাঁচি-কাশির সময় তাদের মুখ থেকে বেরিয়ে আসা মিউকাস এবং লালার সূক্ষ্ম জলীয় কণাগুলি চারিদিকে ছড়িয়ে যায়। সেই সূক্ষ্ম কণাগুলির সংস্পর্শে আসলেই অন্য ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়। ওই সূক্ষ্ম কণাগুলিকেই ড্রপলেট বলা হয়। একবার হাঁচি বা কাশিতে প্রায় ৩০,০০০ হাজার ড্রপলেট থাকে। শার্টের হাতায় মুখ চেপে বা মাস্কের মধ্যে কাশি হলে এই সূক্ষ্ম কণাগুলিকে অনেকাংশেই আটকানো সম্ভব। কিন্তু তা অনেক ক্ষেত্রেই আটকানো যায় না, ফলে তা আশেপাশের বিভিন্ন বস্তু এবং ব্যক্তির গায়ে ছড়িয়ে পড়ে। এই কারণেই জনবহুল স্থানে বেশি সংক্রমণ হয়।
এই ড্রপলেট বাতাসের তুলনায় অনেক ভারি হয়। তাই মুখ থেকে নির্গত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা মহাকর্ষের প্রভাবে মাটিতে বা কোনো বস্তুর উপরেই পড়ে। তবে সেখানে কোনোকিছু স্পর্শ না করে শ্বাস-প্রশ্বাস নিলেও সংক্রমণের সম্ভবনা থাকে না।
এবার জানা যাক এরোসল কী?
মেন্টাল ফ্লস-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী এরোসল হল বায়ুতে ভাসমান ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জলীয় কণা। ড্রপলেট যখন মাটিতে পড়ার চেয়েও দ্রুত গতিতে বাষ্পীভূত হয়, তখন তা ৫ মাইক্রোমিটার নিউক্লিয়ার ব্যাসের কম পরিমাপিত হয়। তখন তুলনামূলক ভারি জলকণাগুলি বাষ্পীভূত হওয়া কণাগুলির মধ্যে থেকে ভাইরাসকে নীচে টেনে নিতে পারে না। ফলে সেই বাষ্পীয় কণার মধ্যে করোনা ভাইরাস ভেসে বেরিয়ে ৩০মিনিট পর্যন্ত সক্রিয় থাকতে পারে। সেই বায়ুবাহিত ভাইরাস সহজেই শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে কোনো সুস্থ ব্যক্তির শ্বাসনালীতে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
এইভাবেই করোনা ভাইরাস বায়ুবাহিত হয়ে উঠতে পারে। আর এই বায়ুবাহিত ভাইরাস খোলা জায়গার তুলনায় বদ্ধ জায়গায় দ্রুত সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, কোথাও বায়ুবাহিত করোনা সংক্রণের কথা এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি। কিন্তু ঝুঁকি তো থাকছেই, তাই এই পরিস্থিতে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে প্রয়োজনীয় নির্দেশিকাগুলি অবলম্বন করুন।
ছবিঃ শাটারস্টক