গল্প কুটির ওয়েব ডেস্ক|
পৃথিবীর তাপমাত্রা যে হারে বেড়ে চলেছে তা নিয়ে চিন্তিত পরিবেশবিদরা। বিশ্ব উষ্ণায়নের দরুন পৃথিবী থেকে অস্তিত্ব হারিয়েছে বহু প্রজাতির উদ্ভিদ এবং পশুপাখিরা। বেঁচে থাকতে চলছে প্রতি মুহূর্তে লড়াই। তবে অবাকজনক বিষয় হল, এই সংকটময় পরিস্থিতিতেই ফিরে এল ৬ কোটি বছর আগে বিলুপ্ত হওয়া একটি গাছ!
গবেষকদের কথায়, এটি অত্যন্ত গরম আবহাওয়ার একটি গাছ। তাঁরা আরও জানিয়েছেন যে, এই গাছের দেখা মিলত ডাইনোসর যুগে। সেই সময় পৃথিবীর তাপমাত্রাও ছিল অপেক্ষাকৃত অনেকই বেশি। আমরা সকলেই জানি, যত সময় গেছে পৃথিবীর তাপমাত্রাও ক্রমে হ্রাস পেয়েছে, পৃথিবী হয়েছে তুলনামূলক হারে শীতল। তাই এই সকল বেশি উষ্ণতার গাছপালাও বিদায় নিয়েছিল চিরতরে। এবার ৬ কোটি বছর পর পৃথিবীর বুকে পুনরায় দেখা গেল সাইকাড গোত্রের এই উদ্ভিদটিকে।
খেজুর গাছের মতো দেখতে এই গাছটির বিজ্ঞানসম্মত নাম হল সাইকাস রিভোলিউটা। ৬ কোটি বছর আগে গাছটির দেখা মিলত ইংল্যান্ডে। এত বছর পরেও পুনরায় ইংল্যান্ডেই এই গাছের সন্ধান পাওয়া গেল।

বিজ্ঞানীদের দাবি, গত বেশ কয়েক বছর ধরেই ইংল্যান্ডের গড় তাপমাত্রার ব্যাপক হারে পরিবর্তন ঘটেছ। যা এই বিলুপ্ত প্রজাতির গাছটির বেঁচে থাকার জন্য উপযুক্ত। গাছটির জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছিল আলাস্কা এবং আন্টার্কটিকাতেও। গবেষকরা গাছটির বীজ সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন ইংল্যান্ডের আইলে অব উইট দ্বীপের উদ্ভিদ উদ্যানে। বহু বছর ধরেই চলছিল ওই বীজ থেকে নতুন গাছ তৈরির চেষ্টা। তবে আলাস্কা, আন্টার্কটিকা এবং ইংল্যান্ডে তাপমাত্রা কম থাকার জন্য বীজ থেকে নতুন গাছের জন্ম নেয়নি। কিন্তু বর্তমানে ইংল্যান্ডের তাপমাত্রা তুলনামূলক বেশি হওয়ায় সেই বীজ থেকে নতু গাছ জন্ম নিতে সক্ষম হয় এবং স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে উঠেছে।
কোটি কোটি বছর আগের এই গাছকে পুনরায় ফিরে পেয়ে খুশি পরিবেশবিদরা। পরবর্তীকালে এই গাছ থেকে আরও সাইকাস রিভোলিউটা জন্ম নেবে বলে বিজ্ঞানীরা আশাবাদী। পরিবেশবিদদের মতে, যে কোনও প্রজাতির উদ্ভিদ বা পশুপাখির বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া যেমন পরিবেশের উপর কুপ্রভাব ফেলে। নষ্ট করে পরিবেশের স্বাভাবিক ভারসাম্য। ঠিক তেমনই বিলুপ্ত হওয়া উদ্ভিদ এবং প্রাণী প্রজাতির পুনরাবির্ভাব হলে তা পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তথ্যসূত্রঃ ভাইস, দ্য গার্ডিয়ান, আনন্দবাজার ডিজিটাল
ছবিঃ ভাইস, দ্য গার্ডিয়ান