গল্প কুটির ওয়েব ডেস্ক|
গ্রীষ্মপ্রধান দেশে থেকে মাত্র দু’মাস শীত উপভোগ করে মন ভরে না। তাই বারবার মন ছুটে চলে সাদা চাদরে মোড়া পাহাড়ের দেশে। ভোরে কুয়াশায় ঢেকে থাকে চারিদিক, বেলায় কখনও মিষ্টি রোদ্দুর, আবার কখনও মেঘর গর্জন ও বৃষ্টি। সবুজ পাহাড়ের উপর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে আটটি বৌদ্ধস্তূপ, সাথে কাঞ্চনজঙ্ঘার মনোরম দৃশ্য। সব মিলিয়ে মন জুরিয়ে যাবে আপনার।
এতক্ষণে নিশ্চয়ই ভাবনায় হারিয়ে গিয়েছেন? তবে বাস্তবেও ঠিক এমনই একটি জায়গা রয়েছে। এনজেপি থেকে সান্দাকফু যাওয়ার পথেই পরবে সেই ঠিকানা। প্রায় ৮,৩৪০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত পাহাড়ে ঘেরা ছোট্ট একটি গ্রাম। নাম ‘চিত্রে’। ছবির মতো গ্রামটি যেমন সুন্দর তেমনই বৈশিষ্ট্যময়। নেপালের সীমান্তে অবস্থিত এই গ্রামে থাকলে মনে হবে তিব্বতে এসে পরেছেন। এখন আপনাদের মাথায় প্রশ্ন জাগতেই পারে ভারতের এই গ্রামটিতে থেকে তিব্বতের আমেজ কীভাবে পাবেন? এর নেপথ্যে রয়েছে একটি ইতিহাস…
তখন ১৯৬০ সাল। তিব্বতে সেই সময় একটি তীব্র রাজনৈতিক অরাজকতা দেখা দিলে সেখান থেকে নামগিয়াল ভুটিয়া নামক এক যুবক তার পরিবার নিয়ে চিত্রে-তে চলে আসেন। তারপর সেখানেই তারা বসবাস শুরু করেন। এরপর আরও কয়েকটি পরিবার এসে বাসা বাঁধে ওই গ্রামে। সেই থেকেই ধীরে ধীরে সেখানে গড়ে উঠেছিল ছোট্ট একটা তিব্বতি গ্রাম। আরও পরে সেখানে গড়ে ওঠে তিব্বতি গুম্ফা ও স্কুল। বর্তমানে এই গ্রামের মানুষগুলি ভারতের নাগরিক। তবে আজও বদলায়নি তাদের সংস্কৃতি। এখন ওই গ্রামটিতে প্রায় ৫টি তিব্বতি পরিবারের বসবাস।
আশে পাশের পাহাড়ি অঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে বহু বৌদ্ধ ছেলেরা তপস্যা ও সংযমের মাধ্যমে পাঠ নিতে আসে গুম্ফায়। পাঠের নিয়ম মতো তাদের সূর্যের আলো দেখাও নিষেধ। প্রায় শ-তিনেক কিশোর সেই গুম্ফায় পাঠ নেয়। তাদের অনেকেই হবে ভবিষ্যতের লামা। আবার অনেকেই আসে পুণ্য জ্ঞান অর্জন করে উচ্চ শিক্ষার জন্য তৈরী হতে। চিত্রে রাত্রি যাপন কাটালেই দেখা মেলে তাদের।
তিব্বতের আমেজ আজ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা দৃশ্য উপভোগ করতে করতেই সময় কেটে যাবে আপনার। তাদের জীবনযাপন প্রণালী, অতীতের বহন করা বেদনাদায়ক ইতিহাস ভাবিয়ে তুলবে আপানার শান্ত মনকে। এছাড়াও প্রিয়জনের সাথে একান্তে সময় কাটানোর উপযুক্ত স্থান এটি।
কীভাবে যাবেনঃ
হাওড়া থেকে এনজেপির ট্রেন ধরতে হবে। এনজেপি থেকে সান্দাকফুর গাড়ি ভাড়া করতে পারেন অথবা শিলিগুড়িতে গিয়ে সেখান থেকে সান্দাকফুর গাড়িতে উঠতে হবে। সেই পথ ধরে ৮৮ কিলোমিটার যাওয়ার পর, পথেই পরবে চিত্রে গ্রাম।
কী দেখবেনঃ
গ্রামটি ঘুরে দেখার পাশাপাশি এখানেই দেখা মিলবে পুরনো ল্যান্ড রোভার গাড়ির। যা এক সময় ব্রিটিশরা রাজা মানসিংহকে সপে গিয়েছিল। আরও ৭ কিমি দূরে গিয়ে দেখতে আসতে পারেন সিংগা লিলা ন্যাশানাল পার্ক। ওই গ্রামের দুপাশের রাস্তাজুরে দেখতে পাবেন রডোডেন্ড্রন ও ম্যাগ্নোলিয়া নামক দুটি পাহাড়ি ফুলের গাছ। এই বসন্ত ঋতুতেই ফোটে সেই সব ফুলগুলি। এছাড়াও সেখান থেকেই ট্রেক করে যেতে পারেন সান্দাকফু, ফালুট ও চিন্তাফু। এক্ষেত্রে আপনার গাইড হতে পারে নামগিয়াল ভুটিয়ার ছেলে জিগমে।
কোথায় থাকবেনঃ
এই গ্রামে কোনও হোটেল তেমনভাবে নেই। তাই হোম-স্টে বা তাবু খাটিয়ে থাকতে হবে। এক্ষেত্রে ভুটিয়াদের হোম-স্টে বেশ বিখ্যাত।
কী খাবেনঃ
ওই উপত্যকায় একমাত্র ভুটিয়া পরিবারের একটি ছোট্ট রেস্তোরাঁ রয়েছে। সেখানে ডিম-টোস্ট, চা-কফি, নুডলস, বিভিন্ন ধরণের চাইনিজ ও তিব্বতি খাবার ও মোমো পাওয়া যায়। যা অন্যান্য জায়গার থেকে অনেকটাই ভিন্ন স্বাদের।
ছবির মতো এই গ্রাম গিয়ে জীবনের অক্সিজেন ফিরিয়ে আনতে এই বসন্তেই ঘুরে আসুন চিত্রে।
ছবি সৌজন্যেঃ পোলারস্টেপস
কমেন্টস
Travel cost approximately kirom porte pare janle subidha hoto
অনেক যায়গায় বানান ভুল আছে। “র” আর “ড়” এর ব্যবহারে। দ্বিতীয়ত, শিলিগুড়ি বা NJP থেকে চিত্রে যাওয়ার বর্ণনা ঠিক নেই। ভায়া ঘুম, মানেভঞ্জন কিম্বা অন্য রাস্তার উল্লেখ বা দূরত্বটা ঠিকঠাক দেওয়া প্রয়োজন।
Lovely ……,interesting
হোম স্টে এড্রেস আর ফোন নাম্বার যদি থাকে একটু দিতে পারবেন
তাহলে খুব ভালো হতো
ধন্যবাদ