গল্প কুটির ওয়েব ডেস্ক|
লেডিকেনি নামটা শুনলেই জিভে জল আসে। রূপে তেমন মনভোলানো না হলেও স্বাদে কিন্তু হৃদয়হরণ এই মিষ্টি। কিন্তু হঠাৎ এমন মিষ্টির আবির্ভাব হল কোথা থেকে? বানালেনই বা কে? আর তার নামই বা এমন অদ্ভুত কেন?
কথিত আছে লেডি ক্যানিং তার জন্মদিনে এমন এক মিষ্টি তৈরি করার কথা বলেন যা এর আগে কেউ কখনো খাননি। ভীমনাগও তৎক্ষণাৎ রাজি হয়ে যায় মেম সাহেবের সাধপূরনে। এরপরই এই বিশেষ ধরনের মিষ্টি তৈরি করেছিলেন তিনি। এই মিষ্টির স্বাদ নাকি এতটাই মুগ্ধ করে সাহেব পত্নীকে, যে সাহেব ভীমনাগকে পুরস্কৃত করেন এবং সেই থেকেই লেডি ক্যানিং -এর নাম অনুসারে এই বিশেষ মিষ্টির নাম হয় ‘লেডি ক্যানিং’। পরে তা লোকমুখে বদলে হয় লেডিকেনি।
তবে আরও একটি মতামত প্রচলিত আছে বাংলায়, প্রথম ভাইসরয় চার্লস ক্যানিং-এর স্ত্রী শার্লট ক্যানিং এদেশে লেডি ক্যানিং নামেই পরিচিত ছিলেন। তার ব্যবহার ছিল বড় মধুর। তিনি একজন দক্ষ চিত্রশিল্পীও বটে। তার মৃত্যুর পরও বেশ কিছুদিন তাকে নিয়ে শহরে চর্চা হয়। তাঁরই স্মৃতির উদ্দেশ্যে কলকাতার বিখ্যাত মিষ্টি ব্যবসায়ী ভীমনাগ বানিয়ে ফেলে এক নতুন ধরনের মিষ্টি। লেডি ক্যানিং এর স্মৃতির উদ্দেশ্যে বানানো বলেই মিষ্টির নাম হয় লেডিকেনি। এইভাবে ভারতের প্রথম ভাইসরয়ের স্ত্রীর নামের স্বাক্ষর বহন করতে থাকে এই রসালো মিষ্টি।
আবার এও শোনা যায় যে স্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে সাহেব নিজেই নাকি এই মিষ্টি বানাতে দিয়েছিলেন। তবে লেডিকেনি বর্তমানে তার রূপ রস হারিয়েছে। এখন পান্তুয়া বা গোলাপ জামুনের আধিক্য বেশি। লেডিকেনি হয় পাতলা রসে ডোবানো, অনেকটা রসগোল্লার মতো। তবে লেডিকেনির গহ্বরে থাকে কিছুটা রস আর একটা এলাচদানা। উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার কয়েকটি হাতে গোনা দোকান ছাড়া এই অকৃত্রিম স্বাদ পাওয়া যাবে না।
ধন্যবাদ সেই বিদেশীনিকে যার জন্য আমরা এমন স্বর্গীয় স্বাদের অধিকারী হতে পেরেছি। তিনি আবদার না করলে বা উদ্যোগী না হলে হয়তো এ রসে বঞ্চিত হতাম আমরা।
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া
ছবি – ইউটিউব