গল্প কুটির ওয়েব ডেস্ক|
‘সত্য সেলুকাস! কি বিচিত্র এই দেশ।’ আর তার থেকেও বিচিত্র এই বিশ্বের মানুষ। নিজের বুদ্ধি বিবেচনাকে কাজে লাগিয়ে মানুষ কখনো কখনো এমন কিছু কিছু কাজ করে ফেলে, যা তাকে নিয়ে যায় বিস্ময়ের উর্দ্ধে। যেমন, যুক্তরাষ্ট্রের উইনকনসিন অঙ্গরাজ্যের সাধারন এক ট্রাক-চালক টিম ফ্রেডি।
টিম ফ্রেডি নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ২০০-এর বেশি সাপের বিষ ইনজেক্ট করেছেন নিজের শরীরে। আর সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হল যে, তিনি এরপরেও জীবিত। এই ট্রাক চালকের বয়স ৫২ বছর। তিনি কোনো বিজ্ঞানী নয়, কোনোদিন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পাও রাখেননি। কিন্তু যে বিশ্বে প্রতি পাঁচ মিনিটে একজন সাপের কামড়ে মারা যায়। যার মধ্যে প্রায় চারজন সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যায়। সেখানে তিনি সাপের কামড়ে মৃত্যুর ভীতি থেকে বাঁচতে প্রায় ২০ বছর ধরে এমন এক ব্যতিক্রমী কাজে লিপ্ত ছিলেন।
ফ্রেডি নিজের বাড়িতেও বেশ কয়েক প্রজাতির বিষধর সাপ রাখেন। তার সংগ্রহে রয়েছে জল কেউটেও। যার এক ছোবলে দেহের স্নায়ুতন্ত্র অবশ হয়ে যায়। এছাড়াও কেউটের বিষে এমন সাইটো টক্সিন থাকে যার ফলে অঙ্গহানিও ঘটতে পারে।

ফ্রেডির নিজের কথায় জানা যায়, বিশ্বে সাপের প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৩০০০। এদের মধ্যে দুশোর বেশি প্রজাতি এতটাই বিষধর যে, কামড়ালেই তৎক্ষণাৎ মৃত্যু। কেউটে, ব্ল্যাক মাম্বা, ভাইপার সবমিলিয়ে মোট ৭০০ বার সাপের বিষ শরীরে ইনজেক্ট করেছেন তিনি। অনেকবারই তাকে বিপদের সম্মুখীন হতে হয়েছে। এছাড়াও দু’বার হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছেন তিনি। তবু এই অদ্ভুত নেশা তাকে ছাড়েনি। তার মতে শরীরে বিষের পরিমান বাড়ালে শরীর নিজেই নাকি তার অ্যান্টিবডি তৈরী করে নেয়।
তবে ডাক্তারদের মতে এসব কাজ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং অনৈতিক। কোনো মানুষই এমন পরীক্ষা করতে পারেন না। নিজেদের জীবন বিপন্ন হতে পারে জেনেও সেটাকে নিয়ে এমন পরীক্ষা করা বে-আইনি। ব্রিটেনের লিভারপুলের এক কোম্পানি সাপের বিষ কাটানোর ওষুধ তৈরী করেছে বলে জানা যায়। তবে তা নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে, ইঁদুরের ওপরেই পরীক্ষা চালানো হয়। যে প্রক্রিয়া মানুষের মৃত্যু ডেকে আনে তাতে সায় নেই বিশেষজ্ঞদের।
জীবনে অ্যাডভেঞ্চার হয়তো আমরা সবাই পছন্দ করি। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, তা যেন জীবনহানিকর হয়ে না পড়ে। এমন কোনো পরীক্ষাকেই সমাজ স্বীকৃতি দেয় না; যা পরিবেশের ক্ষতি করতে পারে বা ঘটাতে পারে অহেতুক প্রাণহানি।
তথ্যসূত্র - বিবিসি নিউজ
ছবি - পিক্সাবে, ডেইলি স্টার