গল্প কুটির ওয়েব ডেস্ক।
ভূত সম্পর্কে আগ্রহ আমাদের বরাবরই বেশি। ভূত বলতে অশরীরী আত্মাকেও বোঝায় আবার অতীতকালকেও বোঝায়। কিন্তু স্বচক্ষে ভূত দেখেছে এমন ব্যক্তির দেখা মেলা ভার। তবে শোনা যায় এই শহরের কয়েকটি পুরনো বিল্ডিংয়ে নাকি বাস করেন এই ভূতেরা। মানুষ পেয়েছে তাদের অস্তিত্বের আভাস।
কলকাতা শহরের ভূত বলতেই প্রথম যে স্থানটির কথা মাথায় আসে, সেটি হল ন্যাশনাল লাইব্রেরি। বহুদিন ধরেই একথা লোকমুখে প্রচলিত যে ন্যাশনাল লাইব্রেরি তেনাদের বাসস্থান। অনেকেই নাকি বই পড়তে গিয়ে ঘাড়ের কাছে অনুভব করেছেন কারও চাপা নিঃশ্বাস। দিনদুপুরে হয়তো শোনাও যায় কারো কারো পদচারণা। কিন্তু কে করছে সেই পদচারণা? আর কেই বা ফেলছে ঘাড়ের ওপরে নিঃশ্বাস?
আলিপুরের এই ভবনটি আগে ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর প্রথম গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংসের। মনে করা হয় তিনি এখনো সেই বিল্ডিংয়ের এদিক-ওদিক ঘোরাফেরা করেন। দিনের বেলা নাকি লাইব্রেরিতে চেয়ার ওলটপালট করার কথাও শোনা যায়। তবে কেউ কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। মতভেদে শোনা যায় হেস্টিংস সাহেব নাকি এখনো খুঁজে চলেছেন তাঁর ব্ল্যাক ব্যুরোটি। তাঁর বিশ্বাস ব্ল্যাক ব্যুরোটি পেলেই তিনি হাউজ অফ কমনসে নির্দোষ প্রমাণিত হবেন। এই বিশ্বাসের ভিত্তিতেই তিনি নাকি ঘোরাফেরা করেন সমগ্র লাইব্রেরিতে।
ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে নাকি অনেকেই ভূত দেখেছেন। ২০১০ সালে আড়াইশো বছরের পুরনো এই বাড়িতে এমন একটি কক্ষের খোঁজ পাওয়া যায়। যার অস্তিত্বই কেউ জানতো না। আরো বিস্ময়ের বিষয় কক্ষটির কোনো প্রবেশদ্বার নেই। নেই কোনো গোপন দরজাও। তবে এখানেই কি জমে তেনাদের আড্ডা?
অনেকে আবার মনে করেন লর্ড মেটাকাফের স্ত্রী লেডি মেটাকাফের আত্মা ঘুরে বেড়ায় লাইব্রেরির অন্দরে-বাহিরে। অনেক বছর আগে ১২ জন শ্রমিক কাজ করতে এসে প্রাণ হারায় এই লাইব্রেরিতে। এটা দুর্ঘটনা হতে পারে। তবে এই ঘটনা ঘটার পর থেকে আরও বেশি করে ভুতের কথা গেঁথে গেছে মানুষের মনে।
লাইব্রেরিতে সত্যিই ভূত আছে কিনা তা এখনও বিতর্কিত বিষয়। তবে একথা সত্যি এমন পুরনো এক স্থাপত্যে গেলে দিনের বেলাতেও গা-ছমছম করাটা স্বাভাবিক।
তথ্যসূত্র – রোয়ার মিডিয়া, ওয়ান ইন্ডিয়া
ছবি – পিক্সাবে