গল্প কুটির ওয়েব ডেস্ক|

ফুচকা নামটা শুনলে জিভে জল আসে না এমন মানুষ বোধয় পাওয়াই দুর্লভ। তবে এই করোনার বাজারে ফুচকা খেতে গিয়ে বেশ হতাশই হতে হচ্ছে আমাদের। যাই হোক, সবার পছন্দের এই অতুলনীয় খাবারটির ইতিহাস জানার কৌতূহল এড়ানো বড়ই কঠিন। কোথা থেকে এমন এক ভুবনভোলানো তৃপ্তিকর খাদ্য এল?  যা শুধু মুখরোচকই নয়, মনোহরও  বটে। তবে ফুচকা তৈরীর ইতিহাসে যে মহাভারতের প্রসঙ্গ থাকতে পারে, একথা সত্যি অভাবনীয়।  

গঙ্গা নদীর তীরে মগধের ধারে ফুলকি নামের এক ধরনের খাবারের প্রচলন ছিল। যার বর্তমান নাম ফুচকা। অনুমান করা হয়, সেখানেই আবিষ্কৃত হয়েছে ফুচকা। ওই সাম্রাজ্যে আরো অনেক ধরনের খাবার আবিষ্কার হয়েছিল। যেমন তেবালা, ছেবরা প্রভৃতি। দুঃখের বিষয়, যে মানুষটি প্রথম ফুচকা তৈরি করেন তিনি হারিয়ে গেছেন ইতিহাসের পাতায়। তবে  আমাদের জন্য রেখে গেছেন এই সুস্বাদু উপহার। 

 ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ফুচকা কিন্তু এত জনপ্রিয় ছিল না। বরং কেউ ফুচকা খেলে তাকে ঘটি  বলে উপহাস করা হতো। ফুচকা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে অনেক পরে। অঞ্চলভেদে সে নেয় বিভিন্ন উপাদেয় নাম। রাজস্থান ও  উত্তর প্রদেশের নাম হল পাতাসি, তামিলনাড়ুতে পানিপুরি। আবার পাকিস্তান, নয়াদিল্লি, জম্মু-কাশ্মীর, হরিয়ানা এবং ঝাড়খন্ডে এর নাম গোলগাপ্পা। তেলেঙ্গানা, ছত্রিশগড়, হায়দ্রাবাদে, ইনি গুপচুপ নামে পরিচিত।  

তবে ফুচকা তৈরীর ইতিহাসের সঙ্গে মিশে আছে এক মহাকাব্য, আর তা হল মহাভারত। হ্যাঁ, অবাক হলেও এটাই সত্যি। দ্রৌপদীর তখন সদ্য বিবাহ হয়েছিল পঞ্চপান্ডবের সঙ্গে।  কুন্তি সে সময় নববধূকে পরীক্ষা করার জন্য কিছুটা আলুর সবজি ও ময়দা মাখা দিয়ে বলেছিলেন, ‘এমন কিছু তৈরি করতে, যাতে তার স্বামীদের পেট ভরে।’ দ্রৌপদী বুদ্ধি খাটিয়ে তৈরি করেছিলেন ফুচকা। কুন্তী এবং বাকিরা তাকে ধন্য ধন্য করেন সে খাবার খেয়ে।  কুন্তির আশীর্বাদে অমরত্ব পায় ফুচকা।  

ফুচকা সত্যিই  অমর। আট থেকে আশি সবাই আমরা কম-বেশি ফুচকা প্রেমিক।  তবে সেই ফুচকা যে এমনভাবে মহাভারতের পাতা থেকে উঠে আসবে তা বোধয় কল্পনাতীত।  

তথ্যসূত্রঃ ডেইলি হান্ট
ছবিঃ শাটারস্টক