গল্প কুটির ওয়েব ডেস্ক|

সোশ্যাল নেটওয়ার্কিয়ের যুগে বেশিরভাগ মানুষ নিজেদের অবসর কাটান সোশ্যাল মিডিয়ায় চ্যাট করে অথবা অনলাইনে বিভিন্ন ভিডিও দেখার মাধ্যমে। এর ফলে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে বই পড়ার অভ্যাস। ব্যস্ত জীবনে সারাদিন পরিশ্রমের পর বাড়িতে বসে বা লাইব্রেরিতে গিয়ে বই পড়ার সময়টুকুও নেই তাদের। এই সমস্যা কিছুটা দূর করতেই একটি অভিনব উদ্যোগ নিলেন তামিলনাড়ুর এক হেয়ার ড্রেসার। নাম মারিয়াপ্পান। এখন আপনারা নিশ্চই ভাবছেন একজন হেয়ার ড্রেসারের সঙ্গে বই পড়ার কী সম্পর্ক? তবে বলি অন্য কারওর সঙ্গে না থাকলেও মারিয়াপ্পানের সঙ্গে বই পড়ার এক নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।

তামিলনাড়ুর থুটুকুড়ির বাসিন্দা মারিয়াপ্পান। সেখানে তিনি একটি সেলুন চালান। কিন্তু এই সেলুন আর দশটা সেলুনের থেকে একেবারেই ভিন্ন। সেখানে একদিকে যেমন রয়েছে চুল কাটার ব্যবস্থা। তেমনি অপরদিকে আছে বই পড়ার আয়োজন।

মারিয়াপ্পানের এই সেলুন-লাইব্রেরিতে প্রায় চারশো বই আছে। দর্শন থেকে শুরু করে ফিকশন, সব ধরণের বইয়ের ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে।  মারিয়াপ্পানের এই উদ্যোগের কারণ হিসাবে জানা যায়, তিনি যখন স্কুলে পড়তেন, বই ছিল তার খুবই প্রিয়। কিন্তু সাংসারিক চাপে মাঝ পথেই পড়াশোনা ছেড়ে কাজে যোগ দিতে হয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মারিয়াপ্পানে আবার বই পড়তে শুরু করেন। তার ধারণা মানুষ যতো বই পড়বে তাদের মধ্যে জ্ঞানের বিকাশ ততোই হবে। তাই মানুষের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাসটা পুনরায় ফিরিয়ে আনতে সেলুনের মধ্যেই লাইব্রেরি গড়েছেন তুলেছেন তিনি।  

এখানেই শেষ নয়। সেলুনে আসা গ্রাহকদের মধ্যে বই পড়ার উৎসাহ বাড়াতে তিনি ছাড়েরও ব্যবস্থা করেছেন। সেই মতো যে সেলুনে এসে একদিনে একটি বইয়ের দশ পাতা পড়তে পারবে, সে পেয়ে যাবে তিরিশ টাকার ছাড়! সত্যিই অভাবনীয় একটি উদ্যোগ। মারিয়াপ্পানের এই প্রচেষ্টায় মুগ্ধ সারা ভারত। বিশেষত বই প্রেমীরা।

এই উদ্যোগের জন্য মারিয়াপ্পান আজ দেশের সকলের নজর কেড়েছেন। বড় বড় শিক্ষাবিদ, মন্ত্রী, আমলারা এতদিনে যা করতে পারেনি। তামিলনাড়ুর এই যুবক করে দেখালেন।